কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি: বর্তমানে বাংলাদেশে লাভজনকভাবে খামারে হাঁস-মুরগির মতো কোয়েলও পালন করা হচ্ছে। বলতে গেলে হাঁস-মুরগির চেয়েও ঘনিষ্ঠভাবে বাণিজ্যিক ও পারিবারিক ভাবে কোয়েল পালনে লাভোবান বেশি হওয়া যায়।
কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি:
কোয়েলের জাত:
বর্তমান বিশ্বে কোয়েলের ১৮টি প্রজাতি রয়েছে। জাত ও উপজাত ভেদে এদের গায়ের রং, ওজন, আকার, আকৃতি, ডিম পাড়ার হার, ডিমের ওজন, বেঁচে থাকার হার ইত্যাদি বিভিন্ন হয়ে থাকে।
বাচ্চা পালন:
কোয়েলের বাচ্চার জন্য ১৪ দিন বা অবস্থাভেদে ২১ দিন পর্যন্ত কৃত্রিম তাপ দিয়ে ব্রুডিং (ইৎড়ড়ফরহম) করতে হয়। সদ্য ফোটা কোয়েল বাচ্চাদের জন্য ব্রুডিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। এরা এ সময় তাপের প্রতি খুব স্পর্শকাতর থাকে। খাঁচা বা লিটার উভয় পদ্ধতিতেই কোয়েলের বাচ্চা পালন করা যায়। তবে সঠিক ভাবে বাচ্চা পালনের জন্য যে সব বিষয়ের প্রতি বিশেষ যতবান হতে হবে তা হচ্ছে- ১. সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা, ২. পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা, ৩. বাচ্চার ঘনত্ব বেশি না হওয়া, ৪. পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানি সরবরাহ করা ও ৫. স্বাস্থ্য বিধি পালন করা।
কোয়েলের আবাস :
লিটার এবং খাঁচায় উভয় পদ্ধতিতেই কোয়েল পালন করা যায়। তবে খাঁচায় পালন করা অধিক সুবিধাজনক। ১২০ সে.মি দৈর্ঘ্য, ৬০ সে.মি প্রস্থ এবং ২৫ সে.মি উচ্চতা বিশিষ্ট একটি খাঁচায় ৫০টি কোয়েল পালন করা যায়। ইদানিং কোয়েল পালনের জন্য সুবিধাজনক প্লাষ্টিকের খাঁচা পাওয়া যাচ্ছে। ৩ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত বাচ্চার খাঁচার মেঝের জালের ফাঁক হবে ৩ মি.মি X ৩ মি.মি এবং বাড়ন্ত ও পূর্ণবয়স্ক কোয়েলের খাঁচার মেঝের জালের ফাঁক হবে ৫ মি.মি X ৫ মি.মি। মুরগির খামারে ব্যবহৃত পাত্রাদির চেয়ে আকারে ছোট পাত্র কোয়েলের জন্য ব্যবহার করলে ভালো হয়। তবে কোয়েল খুব ঘন ঘন পানি পান করে।
আরো পড়ুন: দেশী মুরগি পালন পদ্ধতি
আজ এখানে আমি ১০০০ পাখির ব্যয নিয়ে আলোচনা করবঃ
অনেকে কোয়েল পালনে আগ্রহীকিন্তু এটা করতে কি পরিমাণ মূলধন লাগবে – তা অনেকে জানতে চেয়েছেন।
এখানে ব্যয়কে ২ ভাবে বিভক্ত করতে পারি।
১) আবাসন ব্যয়
২) ক্রয় বাবদ ব্যয়
আবাসন ব্যয়:
১০০০ পাখির লিটার তৈরি তে ১২’x
১২’ আকারের সেড লাগবে।
*সেড তৈরির খরচ- আনুমানিক ৩০,০০০/
*খাবার পাত্র ও পানির পাত্র- ২,০০০/
পাখি ক্রয় বাবদ ব্যয়:
২১ দিন বয়সী বাচ্চা নিলে প্রতি পিস
আনুমানিক ৩০ টাকা ধরে হিসাব
(এখানে বাচ্চার দাম বয়স এবং স্থান
ভেদে কমবেশি হতে পারে) করা হল:
*১০০০x ৩০ =৩০,০০০/
এখানে মোট খরচ =৬২,০০০/ টাকা।
এবার আসি ১০০০ পাখির দৈনিক খাবার খরচের হিসাব:
*১০০০ পাখির প্রতিদিন খাবার খরচ
(প্রথম ১ মাস) = ৮০০/ টাকা
এখন বাচ্চার বয়স হল (২১+৩০)=৫১ দিন। এর
মানে হল আপনি এখন বাচ্চাগুলো
থেকে প্রতিদিনই ডিম পাচ্ছেন! কারন
সাধারণত কোয়েল ৪৫ দিন বয়সেই ডিম দেয়।
বিঃদ্রঃ উপরোক্ত খরচের হিসাব
আপনার এলাকা ভেদে কম বা বেশি
হতে পারে।)